চাল, ডাল, পেঁয়াজ ও ভোজ্য-তেলের দাম বেড়েছে কয়েক সপ্তাহ ধরে

ছবির উৎস,

ছবির ক্যাপশান,

চাল, ডাল, পেঁয়াজ ও ভোজ্য-তেলের দাম বেড়েছে কয়েক সপ্তাহ ধরে

সরকার কিন্তু একে ঠিক রেশন হিসেবে বর্ণনা করতে চাইছে না, মি. তালুকদার। তারা একে একটি সাময়িক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। পরিস্থিতি মোকাবেলার একটা কৌশল হিসেবে দেখছে। তবে এটা ঠিকই যে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের চাহিদা শুধু এই কোটি লোকেরই না, আরও বহু পরিবার রয়েছে।

রংপুরের খটখটিয়া থেকে মো. ইলিয়াছ হোসেন লিখেছেন টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড সম্পর্কে।

সরকার সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্য ক্রয়ের জন্য স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে 'ফ্যামিলি কার্ড' বিতরণ শুরু করেছে। এটা খুবই সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের দুঃস্থ-অভাবী লোকেরা কিছুটা হলেও উপকৃত হবে বলে আশা করা যায়।

কিন্তু এরই মধ্যে গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে কিছু অসাধু চক্রের সহযোগিতায় কর্তৃপক্ষ স্বজনপ্রীতি করে সমাজের বিত্তবান ও আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারের সদস্যের নামে এই কার্ড ইস্যু ও বিতরণ করছে। তবে তাই যদি হয়, তাহলে সমাজের প্রকৃত অভাবী ও সুবিধা-বঞ্চিতরা ক্ষতি ও বঞ্চিত হবেন এই মহৎ কার্যক্রম থেকে।

সরকারি পণ্য কেনার দীর্ঘ লাইনে উদ্বিগ্ন কিছু ভোক্তা।

ছবির উৎস,

ছবির ক্যাপশান,

সরকারি পণ্য কেনার দীর্ঘ লাইনে উদ্বিগ্ন কিছু ভোক্তা।

এই শঙ্কা এই বিশেষ কর্মসূচি শুরুর গোড়া থেকেই ছিল মি. হোসেন, সরকার থেকে যখন বলা হচ্ছিল যে জনপ্রতিনিধিরাই ঠিক করবেন কে এই কার্ড পাবে আর কে পাবে না। ফলে স্বজনপ্রীতির সুযোগ নিয়ে তখনই একটা প্রশ্ন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এখন আপনার চিঠি পড়ে মনে হচ্ছে সেই আশঙ্কাই সত্যে পরিণত হয়েছে।

এই কর্মসূচি যতই মহৎ কোন না কেন, দরিদ্ররা যদি এর সুফল ভোগ করতে না পারে, তাহলে এটি ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকির মুখে থাকবে। আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

বাংলাদেশে এক সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেছেন, রেভিনিউ সাপোর্ট যেটুকু দেয়া সম্ভব সেটুকু দেয়ার পরও ভোক্তাদের বাড়তি দামে কেনার মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হবে। এই বক্তব্যে অনেকের মধ্যেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। আমাদের ফেসবুকের এক ফলোয়ার শাহজাহান বিক্রম লিখেছেন:

বেশি টাকা দিয়ে কেনার মন-মানসিকতা থাকতে হবে, এমন কথার তীব্র নিন্দা জানাই। উনার মত লাখ লাখ টাকা সাধারণ মানুষের আয় হয় না। যে দাম যাই হোক মানুষ কিনবে। গরীবের সমুদয় অর্থ ধনীরা পণ্য বিক্রির মাধ্যমে কিভাবে হাতিয়ে নিতে পারে সেজন্য বড় বড় দালাল নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ধীরে ধীরে একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে।

ছবির উৎস,

ছবির ক্যাপশান,

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ধীরে ধীরে একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে।

নিন্দার পাশাপাশি হতাশা ফুটে উঠেছে আরেক ফেসবুক ফলোয়ার মো. শাহজাহানের এই মন্তব্যে:

যাদের ডান বাম থেকে টাকা আসে তারা তো অসাধারণ মানুষ। তাদের কোনো চিন্তা নেই। যত জ্বালা সাধারণ মানুষের,মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত আর দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষের। পণ্যের বাড়তি দামের চাপে তাদের মরার দশা। তার ওপর গ্যাসের মূল্য, বিদ্যুতের মূল্য,ওয়াসার পানির মূল্যবৃদ্ধির পায়তারা চলমান। সাধারণ মানুষের কথা ভাবার সময় কোথায়। যত জ্বালা নিম্ন-আয়ের মানুষের।

জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়াতে বাংলাদেশে বাধা আয়ের মানুষের যে নাভিশ্বাস উঠেছে এনিয়ে আমরা বেশ কিছুদিন ধরেই নানা ধরনের রিপোর্ট করেছি। দেখেছেন আশা করি। তবে আরও বড়ো পরিসরে দেখলে এটা শুধু এখন বাংলাদেশের সমস্যা না। এই ব্রিটেনেও খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। ফলে সীমিত আয়ের মানুষজন কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে এখন উদ্বিগ্ন।